সঙ্গা: ইলেকট্রন গুলো নিউক্লিয়াসে চারিদিকে কিভাবে কোন নিয়মে সজ্জিত থাকবে তার প্রকাশকে ইলেকট্রন বিন্যাস বলে। অর্থাৎ একটি পরমাণুতে ইলেকট্রন গুলো কিভাবে সজ্জিত আছে তা কোন ধারার সাহায্যে প্রকাশ করা হলে, সেই ধারাকেই ইলেকট্রন বিন্যাস বলে।
পরমাণুর কেন্দ্রে
একটি নিউক্লিয়াস থাকে যেখানে ধণাত্মক চার্জযুক্ত প্রোটন ও চার্জবিহীন
নিউট্রন অবস্থান করে। নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে নিউক্লিয়াসের বাহিরে
কতগুলো কাল্পনিক পথে ইলেকট্রনগুলো পরিভ্রমণ করে। এই কাল্পনিক পথগুলোকে
প্রধান শক্তি স্তর বলা হয়। যাদেরকে প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা n দ্বারা
প্রকাশ করা হয়।
যদি n=1 হয় তবে তা প্রথম প্রধান শক্তিস্তর।
যদি n=2 হয় তবে তা দ্বিতীয় প্রধান শক্তিস্তর।
যদি n=3 হয় তবে তা তৃতীয় প্রধান শক্তিস্তর।
------------------ ------------------------------ ---------
------------------ ------------------------------
এই
প্রধান শক্তিস্তর গুলোকে অরবিট বলা হয়। এক একটি প্রধান শক্তিস্তর আবার
একাধিক উপস্তরে বিভক্ত থাকে যাদেরকে অরবিটাল বলা হয়। উপশক্তিস্তর গুলোকে
সহকারী কোয়ানটাম সংখ্যা L দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
প্রধান কোয়ানটাম সংখ্যার মান ১ থেকে শুরু হলেও সহকারী কোয়ানটাম সংখ্যার মান ০ থেকে শুরু হয়।
যেহেতু
প্রধান শক্তিস্তর গুলোই একাধিক উপশক্তিস্তরে বিভক্ত হয় তাই কোন শক্তিস্তর
কতটি উপশক্তিস্তরে বিভক্ত হবে তা প্রধান কোয়ানটাম সংখ্যা n ও সহকারী
কোয়ানটাম সংখ্যা L এর মানের উপর নির্ভর করে।
এক্ষেত্রে,
যখন n=1 হয় তখন l= 0 হয়।
যখন n=2 হয় তখন l= 0,1 হয়।
যখন n=3 হয় তখন l= 0,1,2 হয়।
যখন n=4 হয় তখন l= 0,1,2,3 হয়।
অর্থাৎ
প্রথম প্রধান শক্তি স্তরে অর্বিটাল আছে ১ টি
দ্বিতীয় প্রধান শক্তি স্তরে অর্বিটাল আছে ২ টি
তৃতীয় প্রধান শক্তি স্তরে অর্বিটাল আছে ৩ টি।
এই উপশক্তিস্তরগুলোর পৃথক পৃথক নাম আছে।
যেমন:
যখন l=0 হয় তখন এটি S অর্বিটাল
যখন l=1 হয় তখন এটি p অর্বিটাল
যখন l=2 হয় তখন এটি d অর্বিটাল
যখন l=3 হয় তখন এটি f অর্বিটাল
অর্থাৎ
যখন n=1 হয় তখন l=0 হয়। এটি প্রকাশ করে যে,
প্রথম প্রধান শক্তিস্তরে একটি অর্বিটাল S বিদ্যমান।
যখন n=2 হয় তখন l=0,1হয়। এটি প্রকাশ করে যে,
দ্বিতীয় প্রধান শক্তিস্তরে দুটি অর্বিটাল S ও P বিদ্যমান।
যখন n=3 হয় তখন l=0,1,2 হয়। এটি প্রকাশ করে যে,
তৃতীয় প্রধান শক্তিস্তরে তিনটি অর্বিটাল S, P ও d বিদ্যমান।
যখন n=4 হয় তখন l=0,1,2,3 হয়। এটি প্রকাশ করে যে,
চতুর্থ প্রধান শক্তিস্তরে চারটি অর্বিটাল S, P, d, f বিদ্যমান।
---------------- ---------- -----------------------
---------------- ---------- -----------------------
এখন
ইলেকট্রনগুলো নিউক্লিয়াসের চারিদিকে বিদ্যমান প্রধান শক্তিস্তরগুলোর কোন
কোন উপশক্তি স্তরে কোন নিয়মে প্রবেশ করবে তা প্রয়োজনীয় সূত্রের মাধ্যমে
আমরা সহজেই নির্ধারণ করতে পারব।
১। ম্যাডেলুং নীতি (Madelung’s Rule) বা n + l
নীতি: ম্যাডেলুং নীতি বা n + l নিয়ম অনুসারে, কোনো অরবিটালের n এবং l এর যোগফল যত কম হবে, সেই অরবিটালের শক্তি তত কম হবে।
অনুসরণ:
যদি দুটি অরবিটালের n + l মান সমান হয়, তাহলে যে অরবিটালের n এর মান কম,
সেটির শক্তি কম হবে এবং প্রথমে ইলেকট্রন সেই অরবিটালে বসবে।
উদাহরণ:
3d অরবিটালের n + l = 5 এবং 4s অরবিটালেরও n + l = 5। তবে 4s-এর n মান কম
(4s → n=4, l=0) হওয়ায় ইলেকট্রন প্রথমে 4s অরবিটালে যাবে।
১. আউফবাউ নীতি (Aufbau Principle)
আউফবাউ নীতি অনুযায়ী, ইলেকট্রন সর্বনিম্ন শক্তিস্তর থেকে শুরু করে ক্রমান্বয়ে উচ্চ শক্তিস্তরে স্থাপন করা হয়। প্রথমে 1s অরবিটালে ইলেকট্রন পূর্ণ হয়, এরপর 2s, তারপর 2p, এবং এভাবে চলে।
আউফবাউ নীতি ও ম্যডেলুং নীতি কে অনুসরণ করে আমরা বিভিন্ন উপশক্তিস্তর গুলোকে তাঁদের শক্তির ক্রমানুসারে সাজালে পাই -
অতএব বিভিন্ন শক্তিস্তরের অর্বিটাল গুলোকে তাঁদের শক্তির ক্রমানুসারে সাজালে আমরা নিম্নরূপ ধারা পাই-
1s → 2s → 2p → 3s → 3p → 4s → 3d → 4p → 5s → 4d → 5p → 6s
→ 4f → 5d → 6p → 7s → 5f → 6d → 7p
এখন
দেখতে হবে কোন অর্বিটাল এ সর্বোচ্চ কয়টি ইলেক্ট্রন প্রবেশ করবে? আমরা
নিম্নক্ত সূত্রের সাহায্যে সহজেই নির্ধারণ করতে পারবো যে একটা অর্বিটাল এ
সর্বোচ্চ কয়টি ইলেক্ট্রন প্রবেশ করবে -
সর্বোচ্চ ইলেক্ট্রন সংখ্যা = 2(2l+1)
s অর্বিটাল এর ক্ষেত্রে l=0 ; অতএব ইলেক্ট্রন সংখ্যা,
= 2(2l+1)
=2(2×0+1)
=2 টি
P অর্বিটাল এর ক্ষেত্রে l=1 ; অতএব ইলেক্ট্রন সংখ্যা,
= 2(2×1+1)
=2×3
=6 টি
d অর্বিটাল এর ক্ষেত্রে l=2 ; অতএব ইলেক্ট্রন সংখ্যা,
= 2(2l+1)
=2(2×2+1)
=10 টি
f অর্বিটাল এর ক্ষেত্রে l=3 ; অতএব ইলেক্ট্রন সংখ্যা,
= 2(2×3+1)
=14 টি
অতএব সকল তথ্য, উপাত্ত ও সূত্রের সাহায্যে আমরা মৌলগুলোর ইলেক্ট্রন বিন্যাস করে পাই-
H (Hydrogen): 1s¹
যেহুতু হাইড্রোজেন এ একটি ইলেক্ট্রন রয়েছে তাই এটি প্রথম প্রধান শক্তিস্তরের একটি অর্বিটাল 1s এ প্রবেশ করেছে।
He (Helium): 1s²
এখানে হিলিয়াম এর দুটি ইলেক্ট্রন থাকায়, দুটি ইলেক্ট্রন দ্বারা 1s অর্বিটাল পূর্ণ হয়েছে।
Li (Lithium): 1s² 2s¹
এখানে
লিথিয়াম এর তিনটি ইলেক্ট্রন থাকায়, দুটি ইলেক্ট্রন দ্বারা 1s অর্বিটাল
পূর্ণ হয়েছে বাকি ইলেক্ট্রনটি পরবর্তী শক্তিস্তরের 2s অর্বিটালে যাবে ।
এভাবে আমরা পর্যায়ক্রমে অর্বিটালগুলোকে ইলেক্ট্রন দ্বারা পূর্ণ করে ইলেক্ট্রন বিন্যাস করতে পারি।
Be (Beryllium): 1s² 2s²
B (Boron): 1s² 2s² 2p¹
C (Carbon): 1s² 2s² 2p²
N (Nitrogen): 1s² 2s² 2p³
O (Oxygen): 1s² 2s² 2p⁴
F (Fluorine): 1s² 2s² 2p⁵
Ne (Neon): 1s² 2s² 2p⁶
Na (Sodium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s¹
Mg (Magnesium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s²
Al (Aluminium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p¹
Si (Silicon): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p²
P (Phosphorus): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p³
S (Sulfur): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁴
Cl (Chlorine): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁵
Ar (Argon): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶
K (Potassium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹
Ca (Calcium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s²
Sc (Scandium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹
Ti (Titanium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d²
V (Vanadium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d³
Cr (Chromium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹ 3d⁵
Mn (Manganese): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d⁵
Fe (Iron): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d⁶
Co (Cobalt): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d⁷
Ni (Nickel): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d⁸
Cu (Copper): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s¹ 3d¹⁰
Zn (Zinc): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰
Ga (Gallium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰ 4p¹
Ge (Germanium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰ 4p²
As (Arsenic): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰ 4p³
Se (Selenium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰ 4p⁴
Br (Bromine): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰ 4p⁵
Kr (Krypton): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰ 4p⁶
Rb (Rubidium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰ 4p⁶ 5s¹
Sr (Strontium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰ 4p⁶ 5s²
Y (Yttrium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰ 4p⁶ 5s² 4d¹
Zr (Zirconium): 1s² 2s² 2p⁶ 3s² 3p⁶ 4s² 3d¹⁰ 4p⁶ 5s² 4d²